গোল্ডেন ব্লাড গ্রুপ। Golden Blood Group
গোল্ডেন ব্লাড গ্রুপ। Golden Blood Group
গোল্ডেন ব্রাঞ্চ গ্রুপ, নাম শুনে মনে হতে পারে যে এমন এক ব্লাড গ্রুপ, যাদের আছে, তারা বোধহয় খুব ভাগ্যবান। বাস্তবে পরিস্থিতি ঠিক তার উল্টো। সারা পৃথিবীতে মাত্র 43 জন মানুষের দেহে এই গ্রুপে রক্ত আছে। তাই রক্তের প্রয়োজন হলে ভীষণ সমস্যায় পড়তে পারেন এই গ্রুপের রক্ত ধারণকারী মানুষেরা।
গোল্ডেন ব্লাড গ্রুপের প্রকৃত নাম হল আর এইচ-নাল ব্লাড গ্রুপ। সকল মানুষের রক্তে গড়ে প্রায় 16 রকমের গ্রুপ নির্ধারণকারী অ্যান্টিজেন থাকে। অর এইচ নাল গ্রুপের রক্তে এই সকল এন্টিজেন থাকে না। আর এই জন্য এই গ্রুপের মানুষেরা সাধারণ মানুষের রক্ত গ্রহণ করতে পারেন না।
1961 সালে প্রথম একজন অস্ট্রেলিয়ান মহিলার দেহে প্রথম দেখা যায় গোল্ডেন গ্রুপ। ডাক্তাররা মনে করেন যে, আরে এইচ নাল গ্রুপের রক্ত ধারণকারী শিশুর ভ্রূণ অবস্থায় মৃত্যু ঘটে। আর এই কারণে এই গ্রুপের জীবিত মানুষের সংখ্যা এত কম।
যদি ৯৯% মানুষের রক্ত এ রক্তে, যে সকল সাধারণ অ্যান্টিজেন পাওয়া যায় সেগুলি না থাকে, তাহলে সেই অ্যান্টিজেন না থাকা রক্তের গ্রুপকে বিরল বলা হয়। কিন্তু 99.99% মানুষের রক্তে যে সকল অ্যান্টিজেন আছে, সেগুলি না থাকা রক্তের গ্রুপকে অতি বিরল বলা হয়। আর এইচ নাল হল অতি বিরল গ্রুপের রক্ত।
1974 সালে 1০ বছরের কিশোর সমাজ থমাস জেনিফার ইউনিভার্সিটি হসপিটালে চিকিৎসা করার জন্য পৌঁছায়। তার রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তার রক্তে কোন অ্যান্টিজেন নেই। সে কিভাবে বেঁচে আছে, এটা বিজ্ঞানের চোখে অবাক করা ঘটনা। আসলে তার বেঁচে থাকার কথা নয়। ডাক্তাররা গবেষণার প্রয়োজনে তাকে অ্যামস্টারডাম ও প্যারিসে পাঠান। দেখা যায় তার রক্তের গ্রুপ হল আর এইচ নাল।
আর এইচ নাল গ্রুপের ব্যক্তিরা যেকোনো ব্যক্তিকে রক্ত দিতে পারেন। অর্থাৎ এরা ইউনিভার্সাল ডোনার। কিন্তু কোন ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করতে পারেন না। সেখানেই সমস্যা। আর এইচ নাল গ্রুপের ব্যক্তিরা ভিনদেশে রক্ত করতে দান করতে পারবেন না ,আইনত জটিলতার কারণে।
আর এইচ নাল গ্রুপের ব্যক্তিরা সাধারণত স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন। তারা সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। অবশ্য সামান্য অ্যানিমিয়ার সমস্যা থাকে। এত কিছু পরও তাদের জীবন একটু আলাদা। তাদের একটু বেশি সচেতন থাকতে হয়। খেয়াল রাখতে হয় যাতে কোনোভাবেই আঘাত না লাগে। কারণ তাদের কাছে রক্তপাত, মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।