Healthy Lifestyle স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাখাদ্য ও পানীয় Food & Drinksপন্য Product

দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম থাকে এই খাবারগুলিতে। Foods that contain more calcium than a glass of milk:

আমাদের হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। আমাদের হার্ট, স্নায়ু ও পেশির কাজ স্বাভাবিক রাখতে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়ামের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উৎস হল দুধ। এক গ্লাস অর্থাৎ প্রায় 250 মিলিলিটার দুধে 300 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। প্রতিদিনের ক্যালসিয়াম চাহিদার 25 শতাংশ আমরা দুধ থেকে পেতে পারি। তবে দুধই ক্যালসিয়ামের একমাত্র এবং সর্বোত্তম উৎস এমন নয়। বেশ কিছু খাদ্য আছে যেগুলিতে দুধের চেয়েও বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম থাকে এমন খাবারগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি ক্যালসিয়ামের দারুণ উৎস। পালং শাক, সরিষার শাক, শালগম শাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, মূলার শাক ইত্যাদির মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে। এক কাপ রান্না করা পাতা যুক্ত এই ধরনের শাকসবজিতে, এক কাপ দুধের চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। একারণে ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে অবশ্যই শাকসবজি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

সয়াবিনের দুধ থেকে তৈরি বিশেষ ধরনের পনিরের মত খাদ্য হল টোফু। টোফু একটি কম চর্বিযুক্ত,  কোলেস্টেরল মুক্ত, প্রোটিন জাতীয় খাদ্য। এটি নিরামিষাশীদের জন্য একদম উপযুক্ত। এক কাপ টোফুতে প্রায় 500 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। বিভিন্নভাবে টোফু রান্না করা যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটানোর জন্য এটা বেশ ভাল একটা খাবার।

আমন্ড বাদামের সাথে জল মিশিয়ে পেস্ট করে আমন্ড দুধ তৈরি করা হয়। এক কাপ আমন্ডের দুধে প্রায় 450 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। গরুর দুধের বেশ ভাল বিকল্প হল আমন্ডের দুধ। এছাড়া জলে ভেজানো আমন্ড বাদাম গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। ক্যালসিয়াম ছাড়াও আমন্ডের মধ্যে ফাইবার, স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন E থাকে। আমন্ড রক্তচাপ কমায়, খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং বিভিন্ন বিপাক-জাত রোগের সম্ভাবনা কমায়।

চিয়া বীজ ছোট কিন্তু শক্তিশালী, কারণ চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে। 4 টেবিল চামচ চিয়া বীজে প্রায় 350 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়া চিয়া বীজে আছে ফাইবার ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আমাদের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বেশ উপকারী। চিয়া বীজ গ্রহণ করার সহজ উপায় হল চিয়া বীজকে জলে ভিজিয়ে রেখে জল সহ বীজ খেয়ে ফেলা। এছাড়া চিয়া বীজ বিভিন্ন খাদ্যের সাথে যোগ করেও খাওয়া যেতে পারে।

তিলের বীজ বিশেষ করে তিল বীজের পেস্ট থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া। 4 টেবিল চামচ তিল বীজের মধ্যে প্রায় 350 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তিলের ব্রিজ বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। স্যালাডে, ভেজে বা রান্নাতে তিল বীজ ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া হালুয়া, লাড্ডু, খাজা ইত্যাদিতেও তিল বীজ ব্যবহার করা হয়।

শুকনো ডুমুর হল ক্যালসিয়ামের অন্যতম ভাল উৎস। এক কাপ শুকনো ডুমুরে প্রায় 360 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এছাড়া ডুমুরে আছে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ডুমুর পটাশিয়াম ও ভিটামিন K থাকে, যা আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। হজম ভাল রাখতে ও সামগ্রিকভাবে সুস্থ থাকতে ডুমুরকে খাদ্য তালিকায় স্থান দিতে হবে।

রাগী হল এক প্রকার মিলেট যা ক্যালসিয়ামের অন্যতম ভাণ্ডার। মাত্র 100 গ্রাম রাগিতে প্রায় 345 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আছে। আর একারণে অবশ্যই সপ্তাহে চার দিন রাগী খাওয়া উচিত। রাগী দিয়ে রুটি, লাড্ডু, প্যান-কেক ইত্যাদি তৈরি করা যেতে পারে।

লেবু জাতীয় ফল বা ফলের রসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। সকালের জল খাবারে অন্যান্য খাদ্যের সাথে লেবুর রস পান করলে ক্যালসিয়ামের অভাব মেটে। এক কাপ কমলার রসে প্রায় 347 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। পরিমিত পরিমাণ কমলার রস গ্রহণ করা ক্যালসিয়াম গ্রহণের একটি সহজ উপায়। তবে জুসের বদলে সম্পূর্ণ ফল খাওয়া বেশি ভাল।

দুধের মত দই হল ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস। দই প্রবায়োটিক সমৃদ্ধ। দইয়ের মধ্যে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এক কাপ দইয়ের মধ্যে প্রায় 488 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। ক্যালসিয়াম ছাড়াও দইয়ের মধ্যে আছে পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন B 2 ও ভিটামিন B12। এছাড়া দইয়ের মধ্যে থাকে প্রোটিন। নিয়মিত দই গ্রহণ করলে হার্টের রোগ ও টাইপ II ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

সামুদ্রিক মাছ যেমন ভোলা, ভেটকি, ইলিশ, পাবদা, পমফ্রেট ইত্যাদি মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। মাত্র 150 গ্রাম সামুদ্রিক মাছে প্রায় 350 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম ছাড়াও সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন D পাওয়া যায় যা আমাদের হাড় শক্ত করে। এছাড়া সামুদ্রিক মাছে থাকে পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। একারণে সামুদ্রিক মাছ আমাদের হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে খুব উপযোগী।

EatingWell, healthline, MedicalNewsToday, Cleveland Clinic, UCSF Health,