Healthy Lifestyle স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রারোগ ও ব্যাধি Health Condition

হার্টের রোগের প্রাথমিক লক্ষণ:  The Warning Signs of Heart Disease:

হার্টের রোগের প্রাথমিক লক্ষণ:  The Warning Signs of Heart Disease:

আপনার হার্টের স্বাস্থ্য কেমন আছে, হার্ট রোগাক্রান্ত কিনা, সেটা জানবেন কিভাবে? হার্ট রোগাক্রান্ত হলেও অনেক সময় তেমন কোনও রোগ লক্ষণ দেখা যায় না। এমনকি বুকের মধ্যে কোন ব্যথা নাও হতে পারে।

হার্টে রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে এবং হার্টের রোগ থেকে রক্ষা পেতে, হার্টের রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি জানা প্রয়োজন। এই প্রতিবেদনে হার্টের রোগের প্রাথমিক লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

হার্টের রোগের প্রাথমিক লক্ষণ গুলি হল:

বুকের মধ্যে অস্বস্তি: Chest Discomfort:

সর্বাপেক্ষা পরিচিত হার্টের রোগের লক্ষণ হল, বুকের মধ্যে অস্বস্তি। ধমনীতে রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হলে অর্থাৎ ব্লক হলে অথবা হার্ট অ্যাটাক হলে এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। মনে হয় বুকের মধ্যে চাপ ধরেছে। সঙ্গে থাকে পিন ফোটানোর মত ব্যথা। ব্যক্তি বিশেষে এই ব্যথার অনুভূতি আলাদা হয়। কেউ বলেন যে বুকের মধ্যে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে, আবার কেউ বলেন বুকে প্রচণ্ড জ্বালা।

চাপ সৃষ্টি হওয়া বা ব্যথার অনুভূতি কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়। কাজ করতে করতে বা বিশ্রামরত অবস্থায় এই সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। খুব কম সময়ের জন্য ব্যথা হলেও বা বুকে চাপ দিলে এই ব্যথা হার্টের কারণে নয় বলে মনে করা হয়। অবশ্যই এক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বুকে ব্যথা ছাড়াও হার্টের সমস্যা হতে পারে। এমনকি হার্ট অ্যাটাকের পরও ব্যথা নাও হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রকম ঘটনা বেশি দেখা যায়।

বদহজম, অম্বল, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব:  Indigestion, Heartburn, Stomach Pain, Nausea:

হার্ট অ্যাটাক হলে ঝিমঝিম ভাব, বমি বা বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা যেতে পারে। এছাড়া হজমে সমস্যা ও পেটে ব্যথা হতে পারে।

পেটে ব্যথা ও হজমের সমস্যার অনেক কারণ আছে। তবে হার্ট অ্যাটাক হলেও এই লক্ষণ গুলি দেখা যেতে পারে।

মাথা ঘোরা বা হালকা মাথার অনুভূতি: Dizzy or Lightheaded Feeling:

হার্টের সমস্যার আরেকটি লক্ষণ হল হতবাক হয়ে যাওয়া। চিন্তা করতে না পারা, অসংলগ্ন আচরণ করা, শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পারা ইত্যাদি। এটা হয় রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যাওয়ার কারণে। কারণ হার্ট অ্যাটাক হলে হৃৎপিণ্ড প্রয়োজনীয় পরিমাণ রক্ত সঞ্চালন করতে পারেনা।

ব্যথা যা বাহুতে ছড়িয়ে পড়ে: Pain that Spreads to Arm:

হার্টের রোগের প্রচলিত একটি লক্ষণ হল বুকের বাঁ দিকে ব্যথা, বাঁহাতে সঞ্চালিত হওয়া। ব্যথা বুক থেকে শুরু হয় এবং হাতের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র হাতে ব্যথা থাকে বুকে থাকে না।

শ্বাসকষ্ট: Shortness of Breath:

হার্ট রক্ত পাম্প করতে না পারার কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা যেতে পারে। হার্ট ফেল হলে এটা হতে পারে। কাজকর্ম করার সময় বা বিশ্রাম করার সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে। চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পায়।

কাশি এবং শ্বাসকষ্ট: Cough or Wheezing:

হার্ট সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে না পারলে, ফুসফুসের মধ্যে তরল জমা হয় এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি হয়। ফুসফুসে তরল জমার ফলে হাঁচি ও কাশি হয়। কাশির ফলে নির্গত মিউকাস বা কফের রং লালচে হয়।

পা, গোড়ালি ও পায়ে ফোলা ভাব: Swelling in the Legs, Ankles and Feet:

পায়ের পাতা গোড়ালি ইত্যাদি ফুলে যেতে পারে হার্টের রোগে। হার্ট ঠিকমতো রক্ত সঞ্চালন করতে না পারার কারণে, পায়ের মধ্যে তরল জমা হয় এবং পায়ের মাংসপেশিগুলি ফুলে যায়।

ক্লান্তি: Fatigue:

সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়া হার্টের রোগের লক্ষণ হতে পারে। যে কাজ আগে সহজেই করতে পারতেন, যেমন সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা, বাজারের ব্যাগ বহন করা ইত্যাদি; সেই কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ করে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়লে সেটা হাটের লক্ষণ।

ঘেমে যাওয়া: Sweating:

তেমন কোন কারণ ছাড়া হঠাৎ করে ঘামতে থাকা, হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের রোগের লক্ষণ। গ্যাসটাইটিস থেকেও ঘাম হতে পারে। কিন্তু হার্টের রোগের অন্য কোন একটি লক্ষণের সাথে ঘাম হতে থাকলে, তখনই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

নাক ডাকা: Snoring:

ঘুমের সময় সামান্য নাক ডাকা স্বাভাবিক। কিন্তু অত্যধিক শব্দে নাক ডাকার কারণ, হার্টের সমস্যা হতে পারে। ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে সমস্যা হলে, হার্টের উপর চাপ পড়ে। নাক ডাকা, ঘুমের মধ্যে শ্বাস নেওয়ার সমস্যার কারণেও হতে পারে।

মন্তব্য: Remarks:

আলোচ্য হার্টের রোগ লক্ষণগুলি দেখা গেলে, প্রথমে একজন ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নেওয়া উচিত। এর সাথে সাথে ই সি জি (ECG) এবং রক্তের লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করে হার্টের স্বাস্থ্য কেমন আছে সেটা জেনে নেওয়া দরকার। সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা আমাদের ভালো থাকতে সাহায্য করে।