রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা Blood Group Test
রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা Blood Group Test (এ বি ও এবং আর এইচ ডি পরীক্ষা ABO & Rh D Typing)
কেন রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা করা হয়? Why get tested, Blood Group?
রক্ত গ্রহণ করার জন্য অথবা দান করার জন্য রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা করা হয় বিশেষ কারণে। কারণ অনেক সময় গর্ভস্থ শিশু ও মায়ের রক্তের গ্রুপ বা শ্রেণি আলাদা হওয়ার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া সন্তান প্রসব হওয়ার সময় অনেক মায়ের অতিরিক্ত রক্তপাত রক্তপাত ঘটে। সেক্ষেত্রে আগে থেকে রক্তদাতা মজুদ রাখতে পারলে সমস্যার সমাধান সহজ হয়। এছাড়া আমাদের দেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার আগেও রক্তের গ্রুপ বা শ্রেণি পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা করতে হয়। রক্তের গ্রুপ বা শ্রেণি জানা থাকলে পরবর্তী সময়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে, আরোহীর চিকিৎসা তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়। এছাড়া কোন অঙ্গ গ্রহণ ও দান করার সময়ও রক্তের গ্রুপ জানার প্রয়োজন হয়।
রক্তের শ্রেণী পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ Collection of Blood Sample for Blood Group Testing.
সাধারণত আঙুলের সূচি-বৃদ্ধ করে কয়েক ফোঁটা রক্ত দ্বারা রক্তের শ্রেণী নির্ণয় করা যায়। তবে ভালোভাবে পরীক্ষা করার জন্য হাতের শিরা থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয়।
কতবার পরীক্ষা করা হয়? Frequency of Blood Group Testing?
একজন মানুষের রক্তের গ্রুপ সারা জীবন একই থাকে। অর্থাৎ অপরিবর্তিত থাকে। রক্তের শ্রেণীর কখনো পরিবর্তন ঘটে না। একারণে জীবনে একবার রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা করা যথেষ্ট। কিন্তু রক্ত গ্রহণ করার সময় ধারাবাহিকভাবে অনেকবার রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হয়। এই পদ্ধতিকে ক্রস ম্যাচিং বলা হয়। তাই কোন রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া প্রায় অসম্ভব।
কি পরীক্ষা করা হয়? What is being tested?
মানুষের রক্তের প্রায় 200 প্রকার গ্রুপ বা শ্রেণী আছে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে এত গ্রুপের কোন প্রয়োজন হয় না। বাস্তবিক জীবনে চিকিৎসা করার সময় সাধারণত এ বি ও (ABO) এবং আর এইচ ডি (Rh D) দ্বারা যে 8 ধরনের গ্রুপ বা শ্রেণী আছে, সেগুলি জানার প্রয়োজন হয়। এই আট ধরনের গ্রুপ বা শ্রেণিগুলি হল; এ পজেটিভ (A Positive) এ নেগেটিভ (A Negative) বি পজেটিভ (B Positive) বি নেগেটিভ (B Negative) ও পজেটিভ (O Positive) ও নেগেটিভ (O Negative) এবি পজেটিভ (AB Positive) এবং এবি নেগেটিভ (AB Negative) ইত্যাদি। দুই ভাবে রক্তের শ্রেণী পরীক্ষা করা যায়।
ফরওয়ার্ড টাইপিং Forward Typing
এক্ষেত্রে লোহিত রক্ত কণিক গুলিতে কি ধরনের অ্যান্টিজেন Antigen আছে সেটা পরীক্ষা করা হয়।
রিভার্স টাইপিং Reverse Typing
এক্ষেত্রে রক্ত রস বা প্লাজমায় কোন ধরনের অ্যান্টিবডি Antibody আছে সেটা পরীক্ষা করা হয়।
রেসাস টাইপিং Rhesus Typing
এই পরীক্ষার সাহায্যে দেখা হয়, লোহিত রক্ত কণিকায় ডি (D) নামক অ্যান্টিজেন আছে কিনা। এই অ্যান্টিজেন ডি উপস্থিত থাকলে পজিটিভ বলা হয় এবং অনুপস্থিত থাকলে নেগেটিভ বলা হয়।
পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাখ্যা।
রক্তের গ্রুপ বা শ্রেণি পরীক্ষার দ্বারা কোন ধরনের রক্ত আপনার দেহে বর্তমান সেটা জানা যায়। রক্ত গ্রহণ করার জন্য এটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ সঠিক গ্রুপের রক্তের বদলে অন্য কোন গ্রুপের রক্ত গ্রহণ করলে রক্ত জমাট বেঁধে যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গেই রোগীর মৃত্যু ঘটবে। রোগীর দেহে যে গ্রুপের রক্ত আছে সেই গ্রুপের রক্ত দেওয়া সব থেকে ভালো। আগে ও (O) গ্রুপের রক্তকে সার্বজনীন দাতা এবং এবি (AB) গ্রুপের রক্তকে সর্বজনীন গ্রহীতা বলে বলা হত। তবে বাস্তবে, বর্তমানে এর কোন ভূমিকা নাই। উন্নত ব্লাড ব্যাংকে ব্লাড সেপারেটর নামক যন্ত্রের সাহায্যে রক্তের বিভিন্ন অংশগুলিকে আলাদা করে বিভিন্ন রোগীকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এখন দেখা যাক কোন গ্রুপের রক্ত কোন গ্রুপের রোগীকে দেওয়া যেতে পারে?
Blood Group and Rh Type of Patient রোগীর রক্তের শ্রেণী ও আর এইচ। |
Compatible Blood Types for RBC Transfusion গ্রহণযোগ্য রক্ত কণিকার শ্রেণী ও আর এইচ। |
A Positive | A Positive, A Negative, O Positive, O Negative |
A Negative | A Negative, O Negative |
B Positive | B Positive, B Negative, O Positive, O Negative |
B Negative | B Negative, O Negative |
AB Positive | AB Positive, AB Negative, A Positive, A Negative, B Positive, B Negative, O Positive, O Negative |
AB Negative | AB Negative, A Negative, B Negative, O Negative |
O Positive | O Positive, O Negative |
O Negative | O Negative |
রোগীর রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ হলে, সেই রোগীকে দেওয়া যাবে এ পজেটিভ, এ নেগেটিভ, ও পজেটিভ, ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত।
রোগীর রক্তের গ্রুপ এ নেগেটিভ হলে, সেই রোগীকে দেওয়া যাবে, এ নেগেটিভ অথবা ও নেগেটিভ,
রোগীর রক্তের গ্রুপ, বি পজেটিভ হলে সেই রোগীকে দেওয়া যাবে, বি পজেটিভ, বি নেগেটিভ, ও পজিটিভ, ও নেগেটিভ।
রোগীর রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ হলে, সেই রোগীকে দেওয়া যাবে, বি নেগেটিভ এবং ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত।
রোগীর রক্তের গ্রুপ এবি পজেটিভ হলে, তাকে দেওয়া যাবে, এবি পজেটিভ, এবি নেগেটিভ, এ পজেটিভ, এ নেগেটিভ, বি পজেটিভ, বি নেগেটিভ, ও পজেটিভ এবং ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত।
রোগীর রক্তের গ্রুপ এ বি নেগেটিভ হলে তাকে দেয়া যাবে এ বি নেগেটিভ এই নেগেটিভ বি নেগেটিভ ও নেগেটিভ ইত্যাদি।
রোগীর রক্তের গ্রুপ ও পজেটিভ হলে তাকে দেয়া যাবে, ও পজেটিভ এবং ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত।
রোগীর রক্তের গ্রুপ ও নেগেটিভ হলে রোগীকে কেবলমাত্র ও নেগেটিভ গ্রুপে রক্তই দেওয়া যাবে।
এতক্ষণ বর্ণনা করা রক্ত সঞ্চালন কেবলমাত্র সেই সকল হাসপাতালে দেওয়া যাবে, সেখানে উন্নত ব্লাড ব্যাংক আছে এবং যে ব্লাড ব্যাংকের মধ্যে, সেল সেপারেটর নামক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের ছোটখাটো হাসপাতালে বা ব্লাড ব্যাংকে এই সুবিধা উপলব্ধ নেই। তাই আমাদের দেশের ছোটখাটো হাসপাতালে বা ব্লাড ব্যাংকে এই ব্যবস্থা কার্যকর নয়। ছোট হাসপাতালে রোগীর রক্তের গ্রুপ যা থাকবে, সেই একই গ্রুপের রক্ত দিতে হবে, অন্য কোন গ্রুপের রক্ত দেওয়া যাবে না।