Healthy Lifestyle স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাখাদ্য ও পানীয় Food & Drinksরূপ চর্চা Beauty Tips

রোজ কত পা করে হাঁটবেন? কখন হাঁটবেন? How Much to Walk Each Day for Ultimate Health?

সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন কতটা হাঁটা উচিত সেটা নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে গবেষণা চলছে। বর্তমানে একটি গবেষণায় এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গিয়েছে। রোজ কত পা হাঁটবেন এবং কখন হাঁটবেন সেটা নিয়ে আলোচনা করা হল এই প্রতিবেদনে।

প্রচলিত ধারণা অনুসারে প্রতিদিন 10000 পা হাঁটার কথা বলা হয়; অর্থাৎ প্রায় 8 কিলোমিটার। এটা উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু বর্তমানে 10000 পা হাঁটার পরামর্শ মেনে চলা সম্ভব হয় না, কারণ বর্তমানের ব্যস্ত জীবনে এতটা সময় দেওয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এতদূর না হাঁটলেও চলবে। মাত্র 2500 থেকে 2700 পা হাঁটলে যথেষ্ট সুস্থ থাকা যায়। এক্ষেত্রে হার্টের রোগের সম্ভাবনা কমে এবং মৃত্যুর ঝুঁকিও কমে। 7000 থেকে 9000 পা হাঁটলে আরও ভাল ফল পাওয়া যায়। হাঁটার গতি মাঝারি থেকে উচ্চ হলে তবেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

ওজন কমানোর জন্য কতটা হাঁটা উচিত, সেটা বয়স, লিঙ্গ, খাদ্য গ্রহণ ইত্যাদির উপর নির্ভরশীল। গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, ওজন কমাতে হলে 15000 পা হাঁটতে হবে। তবে সেটা সম্ভব না হলে 10000 পা হাঁটলেও যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করার সাথে সাথে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে এবং 10000 পা অবশ্যই হাঁটতে হবে।

ফিটনেস বাড়াতে চাইলে প্রথমে আপনি দিনে কতটা অ্যাকটিভ থাকেন সেটা খেয়াল করুন। এবার প্রতি সপ্তাহে 500 পা অতিরিক্ত হাটতে থাকুন। এভাবে ধীরে ধীরে প্রতিদিন 10000 পা হাঁটার জন্য শরীরকে উপযুক্ত করে তুলতে হবে। এভাবে প্রয়োজনীয় ফিটনেস অর্জন করা সম্ভব। প্রতিদিন 10000 পা হাঁটলে আমাদের ফিটনেস লেভেল অনেকটা বেড়ে যায়।

যেকোন সময় হাঁটা যেতে পারে। 24 ঘণ্টার মধ্যে যখনই সময় বের করতে পারবেন তখনই হাঁটুন। তবে হাঁটার সবচেয়ে ভাল সময় হল বিকেল। ভারতীয় আয়ুর্বেদ অনুসারে সকাল হল ব্যায়াম ও প্রাণায়াম করার সময় এবং বিকেল হল হাঁটার সময়। প্রতিদিন কম করে 40 মিনিট হাঁটতে হবে এবং সপ্তাহে কম করে 150 মিনিট অবশ্যই হাঁটতে হবে। তবে আপনি চাইলে প্রতিদিন নাও হাঁটতে পারেন। শারীরিক অবস্থা ভাল থাকলে আরও সময় ধরে হাঁটুন; অর্থাৎ প্রায় 10000 পা হাঁটুন। তবে 2500 পায়ের কম হাঁটলে তেমন উপকার পাওয়া যাবে না। বয়স্ক ব্যক্তিদের হাঁটার ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কোন সময় হাঁটছেন সেটার উপরে হাঁটার উপকারিতা অনেকাংশে নির্ভর করে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে যাওয়া ঠিক নয়। ঘুম থেকে ওঠার কমপক্ষে 30 মিনিট পর হাঁটতে যাওয়া উচিত। সকালে কাজে যাওয়ার তারা থাকলে ঘুম থেকে একটু আগে ওঠার অভ্যাস করা দরকার।

সন্ধ্যায় বা রাত্রে হাটতে চাইলে ঘুমাতে যাওয়ার 2 থেকে 3 ঘণ্টা আগে হাঁটা উচিত। হেঁটে এসে ঘুমোতে যাওয়া ঠিক নয়। এছাড়া খাওয়া ঠিক আগে বা খাওয়া শেষ করে হাঁটা উচিত নয়। সকাল বা বিকেলে হাঁটার সময় না পেলে খাওয়ার কিছুক্ষণ পর 10 মিনিট করে হাঁটলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

যেকোন দিন হাঁটা শুরু করতে পারেন। স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হাঁটার কোন বিকল্প নেই, তাই হাঁটতেই হবে। মন না চাইলেও হাঁটতে হবে। হাঁটার সময় পায়ে জুতো পরা গুরুত্বপূর্ণ। এমন জুতো পড়বেন যাতে পায়ের মধ্যে সঠিকভাবে লেগে থাকে। জুতো অবশ্যই আরামদায়ক হতে হবে।

প্রতিদিন হাঁটার জন্য সময় নির্ধারণ করুন ও পরিকল্পনা করুন। এমন রাস্তা দিয়ে হাঁটুন যেটা নিরাপদ আরামদায়ক ও সুন্দর। হাঁটার জন্য উপযুক্ত জায়গা না পেলে ট্রেড-মিলে হাঁটতে পারেন। একজন বন্ধুকে সঙ্গী করতে পারেন, তবে গল্প করতে গিয়ে হাঁটার গতি কমালে চলবে না। হেড-ফোনে মিউজিক, পডকাস্ট বা অডিও বুক শুনতে শুনতে হাটতে পারেন। তবে এভাবে রাস্তায় হাঁটা চলবে না, বিপদ হতে পারে। হাঁটার গতি ও মাত্রা সম্পর্কে ধারণা পেতে স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করা যেতে পারে।

verywellfit.com, healthline.com, medicalnewstoday.com, prevention.com e.t.c.