Healthy Lifestyle স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাখাদ্য ও পানীয় Food & Drinksরোগ ও ব্যাধি Health Condition

10 টি খারাপ অভ্যাস যা আপনার কিডনি ধ্বংস করে: 10 Bad Habits That May Harm Your Kidneys:

10 টি খারাপ অভ্যাস যা আপনার কিডনি ধ্বংস করে: 10 Bad Habits That May Harm Your Kidneys:

আমাদের দেহের মধ্যে উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থ দেহের বাইরে নিষ্কাশন করতে কিডনি প্রধান ভূমিকা পালন করে। এছাড়া দেহে তরলের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কিডনির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। কিন্তু বর্তমানে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে, অল্প বয়স থেকেই কিডনির সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বেশ কিছু বদ অভ্যাসের কারণে কিডনির রোগ তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রতিবেদনে, কিডনির ক্ষতি করে এমন 10 টি খারাপ অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রদাহ নাশক ও ব্যথা নাশক ওষুধ কিডনির ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের কিডনি অসুস্থ, তাদের ক্ষেত্রে ব্যথা নাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার খুব বিপদজনক। একারণে ব্যথা কমাতে পরিমিত পরিমাণে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। যাদের দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং ব্যথা দূর করার বিকল্প উপায় ব্যবহার করতে হবে।

পর্যাপ্ত জল পান না করলে কিডনির উপর চাপ পড়ে এবং শরীরে উৎপন্ন টক্সিন অর্থাৎ বিষ নিষ্কাশন বাধা পায়। কম জল পান করলে দেহে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। দেহে জলের অভাব হলে ও মূত্রনালি ও মূত্র-থলিতে সংক্রমণ হতে পারে। তাই পরিমিত জলপান করতে হবে। প্রতিদিন প্রায় 2 – 3 লিটার জল পান করা উচিত।

খাদ্যে বেশি পরিমাণ লবণ গ্রহণ করলে দেহে রক্তচাপ বেড়ে যায়, ফলে কিডনির উপর চাপ পড়ে। এছাড়া শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ বাইরে বের করতে গিয়ে কিডনির কাজ বাড়ে। দীর্ঘদিন ধরে বেশি মাত্রায় লবণ গ্রহণ করলে কিডনির ক্ষতি হয়। একারণে অতিরিক্ত লবণ-যুক্ত খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ইত্যাদি কম গ্রহণ করতে হবে।

রাত্রে ভালো ঘুম আমাদের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং কিডনি সুস্থ রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো এবং সকালে জেগে ওঠার প্রক্রিয়াটির, একটি নির্দিষ্ট চক্রাকার ছন্দ আছে। এই ছন্দটি আমাদের কিডনির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে। একারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভাল ঘুমের দিকে নজর দিতে হবে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এমন কাজ না করাই ভাল।

উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতির অন্যতম প্রধান কারণ। উচ্চ রক্তচাপের ফলে কিডনির রক্তনালী গুলির উপর চাপ পড়ে ও কিডনির ক্ষতি হয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে জীবন যাত্রার মান উন্নত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে হবে।

শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রোটিন অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করলে, বিশেষ করে প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনির উপর চাপ পড়ে। তাই, পরিমিত পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ বাঞ্ছনীয়।

নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপান পান, কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে এবং কিডনির রোগ হতে পারে। অ্যালকোহল মূত্রের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, ফলে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়। মদ্যপান করলে কিডনির রোগের সম্ভাবনা প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পায়। কিডনি সুস্থ রাখতে মদ্যপান বন্ধ করা দরকার।

ধূমপান আমাদের হার্ট ও ফুসফুসের জন্য খারাপ। ধূমপান কিডনির জন্যও খুব খারাপ। যারা ধূমপান করেন তাদের মূত্রে প্রোটিন থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এটি কিডনির ক্ষতির লক্ষণ। ধূমপান বন্ধ করলে কিডনি, হার্ট, ফুসফুস সহ দেহের সকল অঙ্গের উপকার হয়।

দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকার সাথে কিডনি রোগের সম্পর্ক আছে। যদিও এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত তথ্য উপলব্ধ নয়। তবে শারীরিক কার্যকলাপ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এই দুটি বিষয় কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

যোগ ব্যায়াম, প্রাণায়াম, হাঁটা, দৌড়ানো ইত্যাদি আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত আমাদের কিডনির ক্ষতি করতে পারে। বেশি সময় ধরে পরিশ্রম করলে আমাদের পেশির ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পেশী থেকে বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয় যা কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে কিডনির ক্ষতি করে করতে পারে। হঠাৎ করে তীব্র-মাত্রার শারীরিক কার্যকলাপ করা উচিত নয়।