ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ টেস্ট: Dihydrotestosterone (DHT) Test:
ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ টেস্ট: Dihydrotestosterone (DHT) Test:
ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ, সংক্ষেপে ডি এইচ টি (DHT) টেস্টোস্টেরণের মত একটি হরমোন। প্রযুক্তিগত-ভাবে এটি একপ্রকার পুরুষ হরমোন। পুরুষের দেহের অতিরিক্ত লোম, গোঁফ দাড়ি, গম্ভীর গলার আওয়াজ, শক্ত চোয়াল ও পেশীবহুল দেহ ইত্যাদি সবই এই হরমোনের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। এই হরমোনকে প্রধানত পুরুষ হরমোন বলা হলেও, মহিলাদের দেহে সামান্য পরিমাণে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ উপস্থিত থাকে। মহিলাদের দেহে এই ডি এইচ টি (DHT) ইস্ট্রোজেনের এর মত কাজ করে। এই হরমোন দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশে ভূমিকা নেয় এবং যৌনাঙ্গের বৃদ্ধি ও বিকাশে এই হরমোন গুরুত্বপূর্ণ।
কখন পরীক্ষা করা হয়? When to get tested?
ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ কম ক্ষরিত হলে পুরুষের দেহে কিছু রোগ-লক্ষণ দেখা যায়। যেমন যৌনাঙ্গের বৃদ্ধি ও বিকাশ দেরিতে হওয়া, পুরুষদের স্তনের আকার বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি। আবার ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ বেশি ক্ষরিত হলেও কিছু রোগ-লক্ষণ দেখা যায়। রোগ-লক্ষণ গুলি হল, চুল পড়া, যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া, হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া, প্রস্টেট গ্রন্থিতে টিউমার সহ প্রস্টেট বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি। এই সকল লক্ষণ দেখা গেলে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ কম ক্ষরিত হলে তেমন কোন সমস্যা দেখা যায় না। কিন্তু বেশি ক্ষরিত হলে কিছু রোগ-লক্ষণ দেখা যায়। ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ বেশি ক্ষরিত হলে অতিরিক্ত চুল পড়া, মুখের মধ্যে ব্রণ হওয়া, মোটা হওয়া এবং মেনস্ট্রাল পিরিয়ডে অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি রোগ-লক্ষণ দেখা যায়। এই সকল লক্ষণ দেখা গেলে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
যে সকল ব্যক্তি ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ অস্বাভাবিক মাত্রার কারণে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন, তাদের এই টেস্ট করা প্রয়োজন। এর ফলে চিকিৎসায় কতটা উন্নতি হল সেটা বোঝা যায়।
ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ পরীক্ষার আগের প্রস্তুতি: Preparation before testing Dihydrotestosterone:
সাধারণত কোন বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে না। পরীক্ষা করার আগে কোন বিশেষ রোগে ভুগছেন কিনা, সেটা আপনার ডাক্তারকে জানান। বর্তমানে কি কি ওষুধ সেবন করছেন সেটা সম্পর্কে আপনার ডাক্তার এবং ল্যাবরেটরিতে তথ্য দিন।
কিভাবে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়? How is the sample collected for testing?
পরীক্ষার জন্য রক্তের সিরাম বা প্লাজমা ব্যবহার করা হয়। মাত্র 1 মিলি লিটার রক্ত পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট। হাতের শিরা থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আঙুলে সুচ বিদ্ধ করে রক্ত সংগ্রহ করা অসুবিধাজনক এবং এই পদ্ধতিতে রক্ত সংগ্রহ করা উচিত নয়।
পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাখ্যা: What does the test result mean?
ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের স্বাভাবিক মাত্রা:
পুরুষদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের স্বাভাবিক মাত্রা:
বয়স | ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের মাত্রা |
---|---|
10 – 11 | < 7 – 130 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
12 – 13 | <7 – 800 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
14 | <7 – 1200 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
15 – 16 | 100 – 1200 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
17 – 18 | 300 – 1200 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
19+ | 240 – 950 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের স্বাভাবিক মাত্রা:
বয়স | ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের মাত্রা |
---|---|
10 – 11 | <7 – 44 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
12 – 16 | <7 – 75 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
17 – 18 | 20 – 75 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
19+ | 8 – 60 ন্যানোগ্রাম/ডেসি লিটার |
টেস্টোস্টেরণের মাত্রা বেশি হতে পারে টেস্টোস্টেরণের ক্ষরণ বেশি হলে। টেস্টোস্টেরণ একপ্রকার যৌন হরমোন। বয়:সন্ধি শুরু হওয়ার আগে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থি।
মন্তব্য
সেক্স ড্রাইভ বা যৌন মিলনের ইচ্ছা বৃদ্ধি করতে টেস্টোস্টেরনের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ হরমোন। যৌন মিলনের প্রথমেই কেউ অতিমাত্রায় সক্রিয় হতে পারে না। সেক্স ড্রাইভে পারদর্শী হতে একটু সময় লাগে। কেন এমন হয় তার কারণ খুঁজে পেয়েছেন হাবার্ড মেডিকেল স্কুলের বিশেষজ্ঞরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যারা ঘন ঘন যৌন মিলনে অংশ নেয়, তাদের দেহে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আবার দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ উৎপন্ন হলে যৌন মিলনের ইচ্ছা বাড়ে। অর্থাৎ যৌন মিলনই যৌন মিলনের ইচ্ছেকে বাড়িয়ে তোলে এবং বারে বারে মিলিত হতে সাহায্য করে।
ভালো সেক্স উপভোগ করতে হলে ব্যায়াম ও ফিটনেসের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। শারীরিকভাবে কে কতটা ফিট, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ, বয়সটা গৌণ। যৌন মিলনের ইচ্ছে কম বা বেশি থাকলে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরণ টেস্ট করা প্রয়োজন।