Healthy Lifestyle স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাখাদ্য ও পানীয় Food & Drinksরোগ ও ব্যাধি Health Condition

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কিভাবে বুঝবেন?  Sign and Symptoms of High Uric Acid:

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কিভাবে বুঝবেন?  Sign and Symptoms of High Uric Acid:

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধিকে হাইপারইউরিসেমিয়া (Hyperuricemia) বলা হয়। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকলে কিডনিতে পাথর হতে পারে এবং বাত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এই প্রতিবেদনে হাইপারইউরিসেমিয়ার লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হল।

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকাকে হাইপারইউরিসেমিয়া বলা হয়। খাদ্যে উপস্থিত পিউরিন নামক রাসায়নিক ভেঙ্গে গিয়ে ইউরিক অ্যাসিড নামক বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয়। বেশিভাগ ইউরিক অ্যাসিড রক্তে দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে এবং কিডনির সাহায্যে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের বাইরে নির্গত হয়।

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকলে ইউরিক অ্যাসিডের কণাগুলি একত্রিত হয়ে ধারালো ফটিক অর্থাৎ ক্রিস্টালে পরিণত হয়। এই ক্রিস্টালগুলি হাড়ের জয়েন্টে জমা হয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং বাত রোগের সৃষ্টি করে। এগুলি কিডনিতে জমা হয়ে পাথর তৈরি করতে পারে।

রক্তে কিছু পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড থাকা একদম স্বাভাবিক। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কম বা বেশি হলে সেটা বেশ কিছু সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা হল:

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণ এখনও সম্পূর্ণরূপে জানা সম্ভব হয়নি। তবে বংশগত কারণে এবং পরিবেশগত কারণ, যেমন খাদ্য ও স্বাস্থ্য, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যে সকল কারণে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায় সেগুলি হল; মদ্যপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, বেশি পরিমাণে পিউরিন যুক্ত খাদ্য গ্রহণ ইত্যাদি। ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ খাদ্য, সোডা ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, রেড মিট, সামুদ্রিক খাবার ইত্যাদি গ্রহণ করলেও দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি ঘটে। এছাড়া বেশ কিছু রোগ যেমন ব্লাড ক্যান্সার, সোরিয়াসিস, কিডনির রোগ ইত্যাদিতে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে।

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে সাধারণত তেমন কোন রোগ লক্ষণ দেখা যায় না। বাত বা কিডনিতে পাথর হওয়ার আগে পর্যন্ত তেমন কিছু বোঝা যায় না। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে এবং বাত হলে, যে সকল লক্ষণ দেখা যায় সেগুলি হল; পা ফুলে যাওয়া, মাংসপেশি লাল হয়ে যাওয়া, পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এছাড়া গাঁটে ব্যথা, জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া, জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, জয়েন্টে গরম হয়ে যাওয়া ইত্যাদি দেখা যেতে পারে।

উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের কারণে কিডনিতে পাথর হলে, পিঠের নিচের দিকে ব্যথা হয়, ব্যথার কারণে বমি বমি ভাব দেখা যায়। এছাড়া জ্বর হতে পারে, ঠাণ্ডা লাগে, প্রস্রাবে রক্ত নির্গত হতে পারে, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হতে পারে। ঘন ঘন প্রস্রাব হলে, প্রস্রাব করতে সমস্যা হলে, প্রস্রাবে গন্ধ হলে, কিডনিতে পাথর হয়েছে কিনা দেখা প্রয়োজন।

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নির্ণয় করার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। যেকোনো প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে এই টেস্ট করা যায়। ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকার কারণে বাত রোগ হলে, আরও বেশ কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে। বাত হলে বা কিডনিতে পাথর হলে, আলট্রাসাউন্ড ছবি, সিটি স্ক্যান, এক্সরে ইত্যাদির প্রয়োজন হতে পারে।

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকা সত্ত্বেও, তেমন কোন রোগ লক্ষণ দেখা না গেলে, চিকিৎসার প্রয়োজন নাও হতে পারে। কিন্তু কোন উপসর্গ দেখা গেলে অবশ্যই রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে হবে। এছাড়া দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন করতে হবে, জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে, কী খাবেন এবং কী খাবেন না, সেটা জানতে এই ওয়েবসাইটের হোমপেজ ভিজিট করুন।