Healthy Lifestyle স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রারক্ত পরীক্ষা Blood Testল্যাব টেস্ট Lab Test

রক্তের সোডিয়াম পরীক্ষা এবং নরমাল লেভেল: Sodium blood test and normal level:

রক্তের সোডিয়াম পরীক্ষা এবং নরমাল লেভেল: Blood sodium test and normal level:

বিভিন্ন খাদ্য বস্তু, শাকসবজি ও খাদ্য লবণ থেকে আমরা সোডিয়াম গ্রহণ করি। কী কী সমস্যা হলে রক্তের সোডিয়াম টেস্ট করা দরকার এবং টেস্ট করার সময় কী কী নিয়ম মেনে চলা উচিত, সেটাই হল এই প্রতিবেদনের আলোচনার বিষয়।

রক্তের সোডিয়াম পরীক্ষা করলে রক্তের মধ্যে সোডিয়ামের মাত্রা কিরকম আছে সেটা জানা যায়। সোডিয়াম এক প্রকার খনিজ পদার্থ এবং আমাদের দেহের মধ্যে থাকা তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। এছাড়া আমাদের শরীরে অ্যাসিড ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করতে বিশেষ ভূমিকা নেয় সোডিয়াম।

খাদ্যের মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় সোডিয়াম গ্রহণ করি। অতিরিক্ত সোডিয়াম কিডনির দ্বারা মূত্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে নির্গত হয়।

কখন রক্তের সোডিয়াম পরীক্ষা করা হয়? When to get tested for Blood Sodium?

সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সময় সোডিয়াম টেস্ট করা হয়। এটি ইলেক্ট্রোলাইট প্যানেল এবং মেটাবলিক প্যানেলের অন্তর্গত একটি পরীক্ষা।

দেহে সোডিয়ামের অভাবজনিত কোন লক্ষণ দেখা গেলে এই পরীক্ষা করা প্রয়োজন। সোডিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণগুলি হল- ক্লান্তি, দুর্বলতা, ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে যাওয়া, শরীর ঝিন ঝিন করা ইত্যাদি। সোডিয়ামের খুব বেশি অভাব ঘটলে রোগী কোমায় চলে যেতে পারে। সোডিয়ামের মাত্রা ধীরে ধীরে কমে গেলে কোন লক্ষণ দেখা যায় না। এক্ষেত্রে হঠাৎ করে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সোডিয়ামের অভাবজনিত সমস্যা থাকলে, মাঝে মাঝে সোডিয়াম পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেশি থাকলে যে লক্ষণ গুলি দেখা যায় সেগুলি হল- পিপাসা পাওয়া, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া, মাসলে টান ধরা, সহজে উত্তেজিত হওয়া ইত্যাদি। সোডিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে রোগী ছটফট করে, উল্টোপাল্টা আচরণ করে, এমনকি উত্তেজনায় কোমায় চলে যেতে পারে।

যে সকল রোগীদের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে তাদের সোডিয়াম পরীক্ষা করা প্রয়োজন। এছাড়া যে সকল ব্যক্তি ব্লাড প্রেশারের সমস্যায় ভুগছেন, যাদের লিভার অসুস্থ বা যাদের কিডনি অসুস্থ, তাদেরও সোডিয়াম পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যে সকল রোগী ডায়রিয়াতে ভুগছেন বা যাদের হার্ট ফেল হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

সোডিয়াম পরীক্ষার জন্য কিভাবে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়? How is blood sample collected for sodium test?

সাধারণত হাতের শিরা থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। আঙুলে সূচ বিদ্ধ করে রক্ত সংগ্রহ করা যেতে পারে। রক্ত সংগ্রহ করার সময় তেমন কোনও বিপদের সম্ভাবনা নেই। সূচ বিদ্ধ কর স্থানে সামান্য ব্যথা হতে পারে বা রক্ত জমাট বেঁধে হেমাটোমা হতে পারে।

রক্তে সোডিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা: Normal Level of Sodium in Blood:

135 – 145 মিলি ইকুইভ্যালেন্ট (mEq) / লিটার। (135 to 145 milliequivalents/Litre)

রক্তের সোডিয়াম পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাখ্যা: Interpretation of blood sodium test results:

সাধারণত সোডিয়াম পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাখ্যা করা হয়, অন্য কিছু ইলেক্ট্রোলাইট যেমন পটাশিয়াম, ক্লোরাইড ইত্যাদির কথা মাথায় রেখে। রক্তে সোডিয়াম পরিমাণ কম হতে পারে কিছু রোগে যেমন, ডায়রিয়া, বমি, অত্যধিক ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে। শরীরে কিছু হরমোন যেমন কর্টিসোল Cortisol, অ্যালডোস্টেরন Aldosterone ও যৌন হরমোন কম ক্ষরণের কারণে, রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কম হতে পারে।

অতিরিক্ত জল পান করলে, হার্ট ফেলিওরের, সিরোসিস বা কিডনি রোগে, দেহে ফ্লুইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কম হয়। পিটুইটারি গ্রন্থিতে টিউমার সৃষ্টি হয়ে এ ডি এইচ ADH অর্থাৎ অ্যাণ্টি ডাইইউরেটিক হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পেলে মূত্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত জল শরীর থেকে নির্গত হতে বাধা পায় এবং দেহে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায়। এর ফলে মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়।

অপরদিকে, দেহে জলের পরিমাণ কমে গেলে, জল কম পান করলে সোডিয়াম এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কুসিং Cushing বর্ণিত রোগে, ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস নামক রোগে, রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি হয়। অতিরিক্ত লবণাক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

কিছু ওষুধ যেমন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ, জন্মনিয়ন্ত্রণ করার পিল, লিথিয়াম ও ব্যথার ওষুধ সেবন করলে সোডিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।